মোরশেদ শফিউল হাসান

কলকাতায় ‘বাংলাদেশ বইমেলা’ সদ্য শেষ হলো। এ উপলক্ষে আমাদের দেশ থেকে প্রকাশক, লেখক, গ্রন্থপ্রেমী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও অন্য ব্যবস্থাপক, সৌখিন পর্যটক অনেকেই কদিন কলকাতা ঘুরে এলেন। প্রতি বছরই এমন অনেকে যান। কদিন পরই আবার ওদেশের প্রকাশক গিল্ড আয়োজিত গ্রন্থমেলার সময়ও অনেকে যাবেন। সব বারই যান। এ সময় তাঁরা সেখানে নানা সভা-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা, দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন ও আনন্দ-বিনোদন ছাড়াও, নিশ্চয়ই মেলাপ্রাঙ্গনে আগত দর্শক, ক্রেতা এবং ওদেশের গ্রন্থপ্রেমীদের সান্নিধ্যেও কিছুটা সময় কাটান। ভ্রমণকালীন ও অনুষ্ঠামঞ্চে ছাড়াও অনেক স্থানে ও অনেকের সঙ্গে তাঁদের ছবিও ইদানীং বিশেষ করে ফেসবুকের কল্যাণে আমরা দেখতে পাই। কিন্তু ফিরে এসে বইমেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে কি পত্রপত্রিকায় কি সামাজিক মাধ্যমে ছোটবড় কোনো লেখা তাঁদের কাউকে কখনো অন্তত ইদানীংকালে লিখতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না।

যার ফলে বাংলাদেশের বইয়ের ব্যাপারে ‘ওপার বাঙলা’র পাঠকদের আগ্রহের পরিমাণ (এমনকি আদৌ কোনো আগ্রহ আছে কি না), আমাদের কোন-কোন লেখকের বা কী-কী ধরনের বইয়ের চাহিদা সেখানে আছে, কোন ধরনের বই তাঁদের মোটেও আকৃষ্ট করে না (আমরা বৃথাই পয়সা খরচ করে কার্টন বেঁধে নিয়ে যাই এবং অবিক্রিত অবস্থায় ওখানে ফেলে রেখে আসি) জানা সম্ভব হয় না। সত্যি কথা বলতে, বছরের পর বছর এ ব্যাপারে আমরা অন্ধকারেই রয়ে যাচ্ছি। যেমন গত দু-বছরে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এদেশে শত শত বই প্রকাশিত হয়েছে। সে সব বইয়ের বিরাট অংশই মানহীন এবং এদেশেও পাঠক আকর্ষণ করতে অসমর্থ, অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু কিছু হলেও তো তাৎপর্যপূর্ণ প্রকাশনা হয়েছে। বইমেলা উপলক্ষে বা তার বাইরে তেমন বইয়ের ব্যাপারে কলকাতার পাঠকদের আগ্রহ কতটা, জানার আমাদের স্বাভাবিক কৌতূহল রয়েছে। কিন্তু সে কৌতূহল নিবৃত্তির উপায় কী?

এ ব্যাপারে আমাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া প্রকাশক, লেখক ও গ্রন্থানুরাগীদের নীরবতা বা উদাসীনতার প্রেক্ষাপটে ওপার বাঙলার বন্ধুদের কেউ কি বাংলাদেশ বইমেলা সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশের বই ও লেখকদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের পাঠকের আগ্রহ বা চাহিদার সঠিক তথ্য বা চিত্রটা তুলে ধরে ছোট্ট হলেও একটা লেখা লিখতে এগিয়ে আসবেন? নাকি তাঁরাও এ ব্যাপারে একইরকম উদাসীন, অনাগ্রহী? ফেসবুক থেকে